adsenes

Wednesday, June 27, 2012

বউবদল অতঃপর


রোমানা হাসিন তারামিয়া শহিদুল।চালচুলো নেই তাদের।অভাবের সংসার। কিন্তুঅভাব ছিল না ভালবাসার। তাই পশ্চিমা জীবনেরসুইঙ্গিং বা সোয়াপিংসম্পর্কে না জানলেও, হলিউডি ছবিবব অ্যান্ড কেরলঅ্যান্ড টেড অ্যান্ডএলিস’ (১৯৬৯) সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকলেও তিস্তাপাড়ের শান্তিরাম গ্রামে সে রকমই এক ভালবাসার টানেতারা গড়ে তুলেছেনশান্তির নীড়। নিজেদেরমতো করে সাজিয়েনিয়েছেন নিজের ঘর-সংসার।
বেছে নিয়েছেন বউ, স্বামী। বদল করেছেন পরস্পরের দাম্পত্য জীবন। বদল বউদের একজনরোমানা সুখেই আছে এখন। দেখতে-শুনতেও মন্দনয়। সুন্দরী বলে গ্রামের সবাইতাকবউ সুন্দরীহিসেবে চেনে। বউ এবং স্বামীবদলের পর নতুনস্বামী শহিদুলের অভাবীসংসারে রোমানা নিজেরঅধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে।নিজের জায়গাজমি এমনকিমাথা গোঁজার মতো ঘর নেই তার। তবুওঅশান্তিতে নেই রোমানা।যা জোটে তাই খেয়ে শহিদুলের নতুন সংসারে আশায়বুক বেঁধেছে। সে বপ্নদেখতে শুরু করেছেনতুন কোন অতিথির।বউ বদল নিয়েগ্রামের সবার মুখেমুখে নানা কথা থাকলেও রোমানা বিষয়ে আর পিছিয়ে থাকতেরাজি নয়। তবে বদল হওয়াআরেক বউ হাসিনাবেগম সাংবাদিক এসেছেশুনে ঘরে তালালাগিয়ে গা-ঢাকাদেন। গ্রামবাসী হাফিজাররহমান জানান, চালচুলোনা কলেওতাদের মধ্যে ভালবাসাআছে। ভালবাসার কারণেতারা নিজেরা বউ বদল করেওসুখে সংসার করছে।মন খুলে অসঙ্কোচে এগিয়ে এসে সাংবাদিকদের কাছে কথা বলেনদুই বন্ধুর বদল হওয়া বউয়েরএকজন রোমানা বেগম।তার বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলারপাঁচগাছি শান্তিরাম গ্রামে।রাইমারি পর্যন্তপড়ালেখা করে অবশেষেবিয়ের পিঁড়িতে বসতেহয়েছে। ২০০৪ সালেরশেষের দিকে তার বিয়ে হয় একই উপজেলারচণ্ডীপুর গ্রামের তারামিয়ার সঙ্গে। স্বামীকবিরাজি ব্যবসা করে।তাদের এক ছেলে-সন্তান- নাম রুবেল। বিয়েরপর স্বামীর সংসারেগিয়ে পরিচয় হয় তার স্বামীরঘনিষ্ঠ বন্ধু শহিদুলইসলামের সঙ্গে। তার বাড়ি একই উপজেলার উজানবোচাগাড়ী গ্রামে। সে বিবাহিত। তার স্ত্রীর নাম হাসিনা বেগম।বিয়ে হয় ১৭ বছর আগে।দেখতে-শুনতে সুন্দর।তাই বিনা যৌতুকেবিয়ে হয় শহিদুলের সঙ্গে। তার ঘরেওএক ছেলে। বয়স বছর।তাদের বাড়ি তিস্তানদীর পাড়ে উজানবোচাগাড়ী গ্রামে। নিজেরকোন জমিজমা নেই।যা ছিল তিস্তানদীতে গেছে। তাই এখন বাধ্যহয়ে তিস্তাপাড়ের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয়নিয়েছে। নিজের ঘর নেই, বোনেরঘরে তার থাকারআশ্রয়। শহিদুল তারা মিয়ারমধ্যে বন্ধুত্বের কারণেএকে অন্যের বাড়িতেযাতায়াত ছিল অবাধে। সুবাদে শহিদুলের স্ত্রী হাসিনার সঙ্গেপ্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তারামিয়ার। একপর্যায়ে তা শারীরিক সম্পর্কে গিয়ে দাঁড়ায়। বিষয়টিগ্রামে জানাজানি হয়ে যায়। একপর্যায়ে হাসিনা প্রেমের টানেঘর ছেড়ে পালিয়েযায় তারা মিয়ারচণ্ডীপুরের বাড়িতে। স্বামীহিসেবে দাবি করে তার ঘরওঠে। তারামিয়ার স্ত্রী রোমানাপ্রথমে স্বাভাবিকভাবে বিষয়টিমেনে নেয়নি। অনেকবাধা দেয়ার চেষ্টাকরেও হাসিনাকে বোঝানোযায়নি। অবশেষে রোমানানিজের সংসারে হাসিনাকে রেখে নিজে চলে যান স্বামীরবন্ধু শহিদুল ইসলামেরঘরে। ঘটনাকেকেন্দ্র করে গ্রামেরপর গ্রাম মানুষেরমুখে মুখে ছড়িয়েপড়লে কানাঘুষা শুরুহয়। রাগে ক্ষোভেযন্ত্রণায় রোমানা নিজেরসংসার ছেড়ে স্বামীরবন্ধুর সংসারে গিয়েতাকে স্বামী হিসেবেদাবি করলে শহিদুলতাকে বরণ করে নেয়। সরজমিনখবর সংগ্রহে গেলেসাংবাদিক এসেছে শুনেবর্তমান তারা মিয়ারস্ত্রী হাসিনা তার ঘরে তালালাগিয়ে গা-ঢাকাদেন। তারা মিয়ারভাবী অজুফা খাতুনএগিয়ে এসে  বলেন, ভাই গ্রামে মুখ দেখাতে পারছিনা। আমার দেবরতারা মিয়া তার বন্ধুর সঙ্গেবউ বদল করেছে।পেপারত ছাপা হচে।বিভিন্ন গ্রামের মানুষতাক দেখার জন্যবাড়িতে ভিড় করে।হামার খুব অসুবিধা। তবে সাংসারিক জীবনেবদল হওয়া বউকেনিয়ে সুখেই আছে বলেন জানানতিনি। বউ বদলেরখবর ছড়িয়ে পড়লেবিষয়টি যাতে আইনেরবাইরে না যায় সেজন্য এগিয়েআসেন চণ্ডীপুর ইউপিচেয়ারম্যান খোরশেদ আলম।তিনি বউ বদলেরবিষয়টি আইনের আওতায়আনতে বিবাহ রেজিস্ট্রার কাজী সাইফুল ইসলামকেসঙ্গে নিয়ে তিস্তাপাড়ের শহিদুলের বাড়িতে যান।তারপর গ্রামের লোকজনডেকে প্রথমে হাসিনাকে তালাক দিয়ে ৩০ হাজার টাকাদেন মোহরানায় বিয়েপড়ানো হয় রোমানাকে। বিয়ে শেষে উপস্থিতগ্রামবাসীর মধ্যে বিতরণকরা হয় আখেরগুড়। তাতেই খুশিগ্রামের লোকজন। কৌতূহলীলোকজনের বেশির ভাগইবিয়ে মেনে নিলেওমহিলারা বিষয়টি অতি বাড়াবাড়ি বলে মনে করেছেন।তাদের মধ্যে কোহিনুরনামের পাশের বাড়িরএক গৃহবধূ বলেন, নারীদের একবারই বিয়েহয়। এটা ক্যামনকাহিনী বাহে। বউ আবার বদল হয় নাকি।বউ বদলের বিষয়টিগ্রামের লোকজন স্বাভাবিকভাবে মেনেনেয়নি। তাদের বিভিন্নজনের নানা মতামতরয়েছে। বলেন এরা পাজি। কেউ বলেন লাইলী-মজনু। তবে বন্ধু শহিদুলএবং তারা মিয়াকেপাওয়া যায়নি। তারাদুজনেই কাজেরসন্ধানে বাড়ি থেকেবেরিয়ে গেছে

No comments:

Post a Comment